বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
সেনাবাহিনীর গাড়িতে সন্ত্রাসীদের হামলা- গণ অধিকারের বিক্ষোভ থানচিতে বি-সেভেন্টি গাড়ি ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত-১ লক্ষ্মীপুরে জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের স্মরণে জেলা প্রশাসনের সভা ফুলবাড়ীতে ক্রয়কৃত জমি জবর দখল করে রাস্তা তৈরির অভিযোগ ফুলবাড়ীতে মাও. আ. হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন রাজশাহীতে শেষ হলো মাসব্যাপী ইয়ুথ কিচেন বিষয়ক প্রশিক্ষণ রাণীশংকৈলে স্কাউটসের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন বগুড়ার ধুনটে ১৬ ডিসেম্বর উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা রাণীশংকৈলে উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন তারাগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ২ নড়াইলে পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনতাই কয়লাখনির কারণে ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরন দাবীতে মানববন্ধন জোরপূর্বক জমি দখল করে রাস্তা তৈরির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন পীরগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন কিশোরগঞ্জে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে ইজিবাইক ছিনতাই আতাইকুলা ইউনিয়ন জামায়াতের সেটআপ সম্পন্ন রাণীশংকৈল ফার্নিচার মিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়ন ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন কুমিল্লায় দুর্ধর্ষ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও তার সহযোগী গ্রেফতার নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ একজন গ্রেফতার ধুনটে চাইল্ড একাডেমীতে অভিভাবক সমাবেশ

২১শে আগস্ট ট্র্যাজেডি নিয়ে- মাদারীপুরে নিহতের স্বজনদের দাবি রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক

মুন্না শরীফ- মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
২০০৪ইং সালের ২১শে আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ-এ অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের নিহত ৪ পরিবারসহ আহত ৩ পরিবারের সদস্যরা ভালো নেই। আহতরা শরীরে স্পিন্টারের যন্ত্রনা নিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। ১৮ বছরেও এসব পরিবারে শোক ও আতংকের ছায়া কাটেনি। হামলায় নিহতের স্বজনরা মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে- ২০০৪ইং সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের নিহত ৪ জন হলো, রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের চানপট্টি গ্রামের যুবলীগ নেতা নিহত লিটন মুন্সি, একই উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মহিষমারি গ্রামের সুফিয়া বেগম, কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের রামারপোল গ্রামের নাছিরউদ্দিন ও ক্রোকিরচর গ্রামের যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহাম্মেদ ওরফে কালা সেন্টু।

আহতরা হলেন- কালকিনি পৌরসভার বিভাগদি গ্রামের হালান হাওলাদার, কৃষ্ণনগর গ্রামের কবির হোসেন, ঝাউতলা গ্রামের সাইদুল হক সরদার।

রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের চানপট্টি গ্রামের যুবলীগ নেতা নিহত লিটন মুন্সির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল বৃদ্ধ বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী ও মা আছিয়া বেগম ছেলের শোকে শোকাহত হয়ে আছে। ২১শে আগস্ট ছেলের নিহতের কথা তারা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না।

নিহত লিটন মুন্সির মা আছিয়া বেগম বলেন- একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আজ আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছি। লিটনের বাবা ও আমি দুজনেই বয়স্ক মানুষ। আমরা প্রায় সময়ই অসুস্থ্য থাকি। লিটনের বাবা এখন কোন কাজ করতে পারে না। আমি অপারেশনের রোগী মাসে আমার ওষুধ লাগে ৫০৮০ টাকার। ভাতা পাই ৩ হাজার টাকা। খুবই কষ্টে দিন যাপন করছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই তিনি যেন একবারের জন্য হলেও আমার ছেলের কবর জিয়ারত করে যায়।

নিহত লিটন মুন্সির এক মাত্র মেয়ে মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান মিথিলা বলেন- ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যখন আমার বাবা মারা যায় তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম। বাবা কি জিনিস তা বুঝতে পারি নাই। বাবার আদর পাওয়ার আগেই বাবাকে হারিয়ে। হামলার ঘটনায় অপরাধীদের বিচারের জন্য রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাই। তাহলে এই ঘটনায় আমার বাবাসহ যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

আহত হালান হাওলাদার বলেন- শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমান স্প্রিন্টার রয়েছে। স্প্রিন্টার জ্বালা-যন্ত্রণা অসহ্য লাগে মাঝে মাঝে। সে কারণে তেমন কাজ করতে পারি না। তারপরেও সংসারের খরচ মেটানোর জন্য ফেরি করে মুরগি বিক্রি করি। করোনার কারনে এখন তা বন্ধ আছে। আগস্ট মাস আসলে দু চোখের পানি যে আর বন্ধ হয় না। সেই দিনের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছি না। আমরা যারা আহত আছি প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতো তা হলে ভালো হতো। আহত অনেকে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে প্রতি মাবে ভাতা পায়। আমি ভাতা পাই না। প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের কালকিনির আহত তিন জনের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেন। আহত অনেকে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ফ্লাট পেয়েছে। আমি ফ্লাট পাইনি। আমার থাকার জন্য স্থায়ী বসত ঘরের প্রয়োজন।

আহত কবির হোসেন বলেন- গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বাম হাতের ৫ আঙ্গুল বাকা হয়ে আছে। এ হাত দিয়ে কোন ভারি কাজ করতে পারি না। দুইবার আমি মাত্র এক লাখ ২০ হাজার টাকা পেয়েছি। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে যে টাকা দিয়েছে আমি সে টাকা পাইনি। তখন আমি টাকা রোজগারের জন্য মালায়েশিয়া ছিলাম। বিদেশে গিয়েও হাতের সমস্যার কারনে তেমন কাজ করতে পারিনি। বাধ্য হয়ে দেশে চলে আসি কয়েক মাস পূর্বে। এখন বেকার জীবন যাপন করছি। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে যে এককালীন টাকা দিয়েছে আমাকেও যেন সে টাকা দেয়। প্রতিমাসে যেন ভাতার ব্যবস্থা করেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাই।

কালকিনির ঝাউতলা গ্রামের সাইদুল হক সরদার বলেন- শরীরে স্পিন্টার নিয়ে যন্ত্রণাকর জীবন-যাপন করছি। শরীরে স্পিন্টারের যন্ত্রনায় তেমন ভারি কাজ করতে পারছি না। ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার বলে উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমি উন্নত চিকিৎসা কি ভাবে করবো। এত টাকা পয়সাতো আমার নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই তিনি যেন আমাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। যাতে করে শরীর থেকে স্পিন্টার বের হয়ে যায়। বাঁচার তাগিদে বিভিন্ন কাজ কর্ম করেও ভালো কিছু করতে পারছি না। ছোট একটা চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাই।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com